চিঠি


চিঠি

রহস্যময়, 

জানি চিঠিটি আপনার কাছে কখনো পৌছাবে না তবুও মনের কোণে এক তীব্র বাসনা আপনি চিঠিটি একবার পড়েন। সব কথা মুখে বলে প্রকাশ করা যায় না তাই হয়তো আগে মানুষ চিঠির মাধ্যমে মনের কথা আদান প্রদান করতো।  সেই জায়গাটি যদিও এখন  ইন্টারনেট দখলে নিয়েছে। ইন্টারনেট এর সাহায্যে টেক্সটে এখন মানুষ মনের কথা প্রকাশ করে যা সে মুখে বলতে পারে না। তাই এখন আর কেউ কাউকে তেমন একটা চিঠি লিখে না কিন্তু  আপনাকে চিঠি লিখতে আমার বড্ড ইচ্ছে করে,  কিন্তু আমি যে আপনার ঠিকানা জানি না,  তার চেয়েও বড় কথা আমি তো আপনার আসল পরিচয়ও জানি না। না জানি আপনার নাম,  না জানি আপনার ঠিকানা,  কিছুই তো জানি না আপনার সম্পর্কে।  আপনি আমার কাছে এক রহস্য।  যেই রহস্য অনেক গভীর। যেটা আপনি নিজে থেকে না চাইলে আমি কখনোই সমাধান করতে পারবো না। 

আপনার আমার মাঝে এক বিশাল শক্ত দেয়াল আছে।  সেই দেয়ালটি না আপনি টপকাতে পারবেন আর না আমি। যেটা অসম্ভব সেটাকে সম্ভব করার বৃথা চেষ্টা করে কি কোনো লাভ হবে বলেন? এর বিনিময়ে শুধু কষ্টেই পাওয়া যাবে যেটা সহ্য করার ক্ষমতা কি আছে? আমি কখনোই ওই দেয়ালটি টপকাতে পারবো না,  কখনোই না। এই সাধ্য আমার নেই,  বলতে পারেন আমার সেই ইচ্ছেটাই নেই। 

আমাদের পরিচয়টা কিন্তু হুট করেই।  একদম অগোছালো ভাবে কোনো এক আড্ডায় আমাদের পরিচয়। তারপর শুরু কথা বলা।  আচ্ছা বলতে পারবেন, আমাদের সম্পর্কের নাম কি? আমি জানি আপনার উত্তর হবে,  "জানি না।" হয়তো আমাদের সম্পর্কের কোনো নাম নেই। আপনি একবার বলেছিলেন,  আপনি আমার থেকে আপনাকে " তুমি" করে সম্বোধন করাকেই বেশি পছন্দ করেন কিন্তু আপনাকে কেন জানি আমার আপনি করে বলতেই বেশি ভালো লাগে। আপনাকে আমি সম্মান করি এবং আপনার থেকেও আমি সবসময় যত্ন ও সম্মান পেয়েছি। আপনার সাথে কথা বলতে আমি কখনোই বিরক্তবোধ করিনি বরং আপনার সাথে কথা বলতে আমার ভালোই লাগে। আপনার কাছে আমার মনের সব কথা শেয়ার করতে ইচ্ছে হয় মনের সব আনন্দ বেদনা আপনার সাথে ভাগাভাগি করে নিতে ইচ্ছে হয়,  আপনি বলেছিলেন,  আমার মনের সব বিষাদ আপনাকে দিতে, জানি দিলে আপনি সেটি সাদরে গ্রহণও করতেন এবং বিনিময়ে অমৃত ফেরত দিতেন কিন্তু ঐ যে আমাদের মাঝের ঐ দেয়ালটি আমাকে বাধা দেয় ।
আপনার আর আমার চিন্তা ভাবনা অনেক ক্ষেত্রে একইরকম,  আমরা অনেক বিষয়ে একই মনোভাব পোষণ করি। আমাদের স্বপ্নগুলোও বলা চলে এক। কিন্তু এর আবার ব্যাতিক্রমও রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আমরা একেবারেই বিপরীত।  যেমন ধরেন,  আপনি শাড়ি পছন্দ করেন আমি করি না,  আপনি গান পছন্দ করেন আমি নাশিদ ইত্যাদি। আপনার আর আমার মাঝের এই সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য আমি অনেক উপভোগ করি।  আপনার বলা "জানি না" "কিছু না" এগুলোও আমি উপভোগ করি।
আমি আপনাকে কখনোই ভুলে যাইনি। হয়তো কখনো ভুলবোও না।  আপনি হারিয়ে গেলেও,  আমাদের আর কখনো কথা না হলেও আমি আপনাকে ভুলবো না।কেন ভুলবো না,  তা আমার জানা নেই। 
আমরা দু'জন দুটি ভিন্ন পথের পথিক। দুটি ভিন্ন জগতের বসিন্দা, যেখানে  আমাদের একেঅপরের জগতে অনুপ্রবেশ একেবারেই নিষিদ্ধ।  জানি এসব কথা আপনার ভালো লাগে না।  সত্যি বলতে, এসব বলতে আমারও ভালো লাগে না। কিন্তু বাস্তবতা তো স্বীকার করতেই হবে। তাই বলবো আমরা আমাদের জগতে ভালো থাকার চেষ্টা করি। আপনি আপনার জগতে আর আমি আমার জগতে।

আমি আপনার জীবনের এক মন খারাপের অধ্যায়।  আপনি এটাকে এড়িয়ে গেলে কোনো সমস্যা হবে না বরং অনেক বেশি ভালোই হবে। আমি আপনাকে না ভুলে গেলে আপনার তেমন কোনো কিছুই হবে না কিন্তু আপনার আমাকে ভুলে যাওয়াটা জরুরি। জানি ভুলা সহজ না কিন্তু সেখানে আটকে থাকবেন না,  এগিয়ে চলেন। আমার বিশ্বাস আপনি আপনার কাঙ্খিত মানুষটিকে অবশ্যই খুঁজে পাবেন। যার জন্য আপনি পাঞ্জাবি পড়বেন,  যে আপনার জন্য শাড়ি পড়বে,  আপনার জন্য সাজবে,  আপনার মনের মতো হবে,  আপনার কথা শুনবে,  আপনার যত্ন করবে এবং আপনাকে অনেক বেশি ভালোবাসবে। 

আপনার মন সবসময় খারাপ থাকে,  থাকবেই।  এটা স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে গেছে বরং যদি কোনোসময় আপনার মন  ভালো হয়ে যায়,  সেটিই হবে অস্বাভাবিক ব্যাপার। আমি চাই এই অস্বাভাবিক ব্যাপারটি ঘটুক। আপনি এবং আপনার মন ভালো থাকুক। আমি চাইবো আপনি নিজেকে এবং নিজের মনকে ভালো রাখুন। কারও জন্য নয় নিজের জন্য নিজেকে ভালো রাখুন।  আমি চাই,  আপনি আপনার জীবনে ভালো থাকুন,  অনেক বেশি ভালো থাকুন.....

ইতি, 
লগ্ন
 


অনিরুদ্ধ
অর্পন
তারা এই গল্পটি পছন্দ করেছেন ।

৪টি মন্তব্য

অনিরুদ্ধ

অনিরুদ্ধ

৮ মাস আগে

এই চিঠির একটা গল্প হওয়ার দরকার...

অর্পন

অর্পন

৮ মাস আগে

@aniruddho ঠিক বলেছেন...

অর্পন

অর্পন

৭ মাস আগে

@rida কেউ ভালো থাকুক এটা চাওয়া আর কাউকে ভালো রাখা দুতো আলাদা ব্যাপার । একটা নিজের হাতে থাকে ... আপনি চাইলেই তাকে ভালো রাখতে পারেন।

Anik Biswas

Anik Biswas

৭ মাস আগে

"চিঠি" নামে আমারও একটি গল্প আছে।


মন্তব্য লেখার জন্য আপনাকে অবশ্যই লগ ইন করতে হবে


আপনার জন্য

নীল দ্বীপ  ( পর্ব ৪)

নীল দ্বীপ ( পর্ব ৪)

মৃন্ময় বাসায় এলো।রুমে ঢু...

লায়লা

লায়লা

"তুমি ছুয়ে দিলে হায়, কিয...

তুমি অনন্যা (পর্ব ০২)

তুমি অনন্যা (পর্ব ০২)

            তুমি অনন্যা ...

ছোট দাদুর বাড়িতে কয়েকদিন.....(পর্ব ১)

ছোট দাদুর বাড়িতে কয়েকদিন.....(পর্ব ১)

ছোট দাদুর  বাড়িতে কয়েকদি...

কিছু করার নেই

কিছু করার নেই

 ১.আজকালকার দিনে চাকরি প...

আমি (পর্ব৫)

আমি (পর্ব৫)

বিচিত্র পৃথিবীর মাঝে বেঁ...

সব পেশাই কি সমান???

সব পেশাই কি সমান???

সবাই বলে সব পেশাই সমান!স...

তুমি অনন্যা  (পর্ব ৬)

তুমি অনন্যা (পর্ব ৬)

রনির মন চাচ্ছে আবার দেখা...

কেমন আছো তুমি

কেমন আছো তুমি

 নিলিকে আমি আমার মনের কথ...

প্রিয় জয়ন্ত স্যার

প্রিয় জয়ন্ত স্যার

তখন সবে হাইস্কুলে উঠেছি।...

উধাও  || পর্ব -১

উধাও || পর্ব -১

৬৬ সালের মে মাস…. প্রমাণ...

তুমি অনন্যা

তুমি অনন্যা

তুমি অনন্যা লেখক:ইসরাত ই...

আমি (পর্ব৪)

আমি (পর্ব৪)

সকালের মিষ্টি রোদ আমার চ...

করোনা

করোনা

নাম ছিলো তার করোনা। খুব ...

টিভিকথন

টিভিকথন

আমাদের ছাদে একটি স্টোররু...

পড়ন্ত বিকেলে...

পড়ন্ত বিকেলে...

পড়ন্ত বিকেলে...সারাদিন ঝ...

আমি(শেষপর্ব)

আমি(শেষপর্ব)

তখন রাত।বসে আছি।ছাদে যেত...

জুতা চোর

জুতা চোর

এই বিশুটা জুতা চুরি করে ...

খাঁটি পাগল

খাঁটি পাগল

বিধূবাবুর কাছে এক পাগল এ...

ভয়ের রাত

ভয়ের রাত

ভয়ের রাত চিন্টুর শরীরটা ...